সেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও ||
কক্সবাজার সদর উপজেলার বৃহত্তর ঈদগাঁওর ইয়াবা সম্রাজ্য ২ পুলিশ কর্মকর্তা নিয়ন্ত্রণ করছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে লাখো টাকার ইয়াবাসহ ২ সম্রাটকে আটকের পর লাখ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার সংবাদে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্রে জানা যায়, ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই ফিরোজ ও এএসআই আমিরুলের নেতৃত্বে পুলিশ গত ২২ জুন দিবাগত গভীর রাতে জালালাবাদ ইউনিয়নের তেলি পাড়ার মৃত ইউনুছের ছেলে ইয়াবা সম্রাট সোহেলের ঘর থেকে তার স্ত্রী মনোয়ারাকে ২ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটকের পর রাতেই লাখ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়। এরই এক সপ্তাহ পূর্বে সোহেলের অপর ভাই ইয়াবা সম্রাট রাসেলকেও এ ২ পুলিশ কর্মকর্তা ১ হাজার পিস ইয়াবাসহ আটকের পর দীর্ঘক্ষণ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে আটকে রেখে একই কায়দায় রাতের আঁধারেই লাখ টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দিয়ে জব্দকৃত ইয়াবাগুলো গায়েব করে ফেলে আলোচিত সমালোচিত এ ২ পুলিশ কর্মকর্তা। উক্ত অভিযোগের বিষয়ে ২ পুলিশ কর্মকর্তার সাথে একাধিকবার কথা হলে তারা বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যায় এবং সাক্ষাতে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেন। এ বিষয়ে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আইসি মিনহাজ মাহমুদ ভুঁইয়ার সাথে কথা হলে ইয়াবাসহ আটকের ঘটনা তিনি অবগত নন বলে জানান। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সরেজমিনে উক্ত ঘটনা পরিদর্শনে গেলে এর সত্যতা মিলবে বলে দাবী করেন এলাকাবাসী। এদিকে এলাকায় একের পর এক খুনসহ চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই অব্যাহত থাকলেও এ ২ পুলিশ কর্মকর্তা এসব অপরাধীদের আটক না করে ইয়াবা সম্রাটদের আটক ও ছেড়ে দেয়ার বাণিজ্যে মেতেছে বলে সচেতন মহলের অভিযোগ। তারা প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নকারী এসব পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। উল্লেখ্য, ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এএসআই ফিরোজ ও এএসআই আমিরুল দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত কেন্দ্রের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অগোচরে বৃহত্তর ঈদগাঁওয়ের ইয়াবা জগত নিয়ন্ত্রণ করে আসছে কৌশলে। দীর্ঘদিন ঈদগাঁওতে থাকার সুযোগে ইয়াবা ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন চিহ্নিত অপরাধীদের সাথে সখ্যতা গড়ে উঠে এ পুলিশ কর্মকর্তাদের। এরা মাসিক, সাপ্তাহিক ও দৈনিক মোটা অংকের টাকায় ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে যাচ্ছে। এসব ইয়াবা ব্যবসায়ীরা এ ২ পুলিশ কর্মকর্তার আশকারায় দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠে। বিশেষ করে এলাকার উঠতি তরুণরা এ মরণ নেশা ইয়াবা ব্যবসা ও সেবনে জড়িয়ে পড়ায় অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। আবার অনেকে ঠিকমত মাসোহারা না দিলে তাদেরকে ইয়াবাসহ আটকের পর মোটা অংকের টাকা নিয়ে গোপনে ছেড়ে দেয়। এতদিন কৌশলে এসব ইয়াবা সম্রাটদের নিয়ন্ত্রণ করলেও এলাকার সচেতন জনসাধারণ ২ পুলিশ কর্মকর্তার এ অপকর্মের বিষয়ে টের পায়নি। সম্প্রতি ২ ইয়াবা সম্রাটকে লাখো টাকার ইয়াবাসহ আটকের পর রাতারাতি ছেড়ে দেওয়ার সংবাদে এলাকাবাসীর সামনে এ ২ পুলিশ কর্মকর্তার মুখোশ উন্মোচন হয়।
পাঠকের মতামত